আন্তর্জাতিক ৮ মার্চ, ২০২১ ০৪:৫২

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযথ মর্যাদায় ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ’ উদযাপন করেছে। বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে ৭ মার্চ একটি অবিস্মরণীয় দিন বলে উল্লেখ করেন কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণই বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মাহেন্দ্রক্ষণে আজকের দিবসটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। দিবসটি উদযাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশী-আমেরিকান নাগরিকগণ, বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানতে পারবেন এবং তার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে অনুপ্রাণিত হবে বলে কনসাল জেনারেল উল্লেখ করেন।

এ সময় তিনি বলেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সুখী, সমৃদ্ধ, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান কনসাল জেনারেল।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের ”রোল মডেল” হিসেবে সুপরিচিত। ২০২১ সালে জাতিসংঘ কতৃক বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবার অর্জনটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কতৃক নির্ধারিত উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনের জন্য সকলকে যার যার অবস্থানে হতে একযোগে কাজ করার আহবান জানান কনসাল জেনারেল।

অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন তাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কনস্যুলেটের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান জানিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এ উপলক্ষে কনস্যুলেটে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন কনসাল জেনারেলসহ কনস্যুলেটের কর্মকর্তাবৃন্দ। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা হতে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী’র বাণী পাঠ করা হয় এবং দিবসটির তাৎপর্য ও ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্বের উপর আলোচনা করা হয়।

আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও জাতির পিতা, তার পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

নিউইয়র্কে করোনা ভাইরাসজনিত বৈশ্বিক মহামারীর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাগতিক দেশের বিধি-বিধান প্রতিপালন করে কনস্যুলেটে এই দিবসটি পালন করা হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে কমিউনিটির অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাৎপর্যপূর্ণ ২০২১ সালটি উদযাপন করা হবে বলে কনসাল জেনারেল আশা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রমনার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতার প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করে।