ডেস্ক রিপোর্ট
আর মাত্র দুদিন বাকি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তাই জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণা। ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। চলছে মাইকিংও। প্রার্থীদের প্রতীক সম্বলিত পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর শহরের অলি-গলি।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ নাসেরুল হক, বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী বর্তমান মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী, নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাতক্ষীরা চেম্বার সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু ও জগ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা নুরুল হুদা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী ডা. এস এম মুসতাফীজ উর-রউফ।
এই পাঁচজনের মধ্যে বর্তমান মেয়রসহ তিনজনের নামে মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৭৩টি মামলা নিয়ে নির্বাচন করছেন জামায়াত নেতা মো. নুরুল হুদা। হলফ নামায় তিনি এ তথ্য উল্লেখ করেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও বিস্ফোরক আইনে তার বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়। বিচারাধীন সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন।
হলফ নামার তথ্য অনুযায়ী, মো. নুরুল হুদা বিএসসি পাশ। ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর আগে তার নামে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরও চারটি মামলা হয়। এর মধ্যে দুটি মামলা ডিসচার্জ ও দুটি মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন।
এদিকে, বিএনপি মনোনীত (ধানের শীষ প্রতীকে) প্রার্থী বর্তমান মেয়র তাজকিন আহম্মেদ চিশতির নামে দুটি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন আছে। তার বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
নারিকেল গাছ প্রতীকের (স্বতন্ত্র) প্রার্থী সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু। তার নামেও দুটি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন আছে। তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ২ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ টাকা।
অন্যদিকে, সাবেক মেয়র শেখ আশরাফুল হকের ছেলে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে প্রার্থী শেখ নাসেরুল হক। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। ভোটারদের কাছে তিনি ক্লিন ইমেজের প্রার্থী। বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এসএম মুসতাফীজ-উর রউফ। তিনি হাতপাখা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। বিএ পাশ এই প্রার্থীর নামে কোনো মামলা নেই। চিকিৎসা খাতে তিনি তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ টাকা।
এদিকে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করলেও ভোটাররা আছেন শঙ্কায়। নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোটটা তারা দিতে পারবেন কিনা সেটাই প্রশ্ন তাদের।
গত ৩০ জানুয়ারি হয়ে যাওয়া জেলার পার্শ্ববর্তী কলারোয়া পৌর নির্বাচনের অংশ গ্রহণকারী প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য দুই প্রার্থীদের সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের কারণে এমন সংশয় জেগেছে অনেক সাধারণ ভোটারদের মনে। যদিও অনিয়মের অভিযোগে সেই নির্বাচনের ফলাফল সাময়িক স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে সব সংশয় কাটিয়ে এবারের পৌর নির্বাচনে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে তার মূল্যবান ভোটটি দিতে পারবেন এমন প্রত্যাশা সাতক্ষীরা পৌরবাসীর।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা পৌর নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজমুল করিম জানান, সাতক্ষীরা পৌরসভায় মোট ভোটারের সংখ্যা ৮৯ হাজার ২২৪ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৪৫ হাজার ৮০৬ জন আর পুরুষ ৪৩ হাজার ৪১৮ জন।
আগামী ১৪ তারিখে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে ৩৭টি ভোট কেন্দ্রের ২৪৮ বুথে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।