ডেস্ক রিপোর্ট
বাংলাদেশ নিয়ে কাতারভিত্তিক আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনের অন্যতম কুশীলব সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামিসহ ১১ জনকে অব্যাহতি দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওই আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য রাষ্ট্রপক্ষে আমি এই আবেদন করি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগকে তদন্ত করে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত ১৩ জানুয়ারি এই মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদকে অভিযুক্ত করে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে রমনা থানা পুলিশ।
মামলায় ১১ আসামির মধ্যে অন্য আটজনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। অব্যাহতির সুপারিশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান, জার্মান প্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, নেত্র নিউজের সম্পাদক ও সুইডেন প্রবাসী তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরি প্রবাসী জুলকারনাইন শায়ের খান ওরফে সামি, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম ও ফিলিপ শুমাখার।
অভিযোগপত্র দাখিলের পর থেকে এ নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা শুরু হয়। এর মধ্যেই মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিটিটিসিতে পাঠানোর আদেশ দেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
২০২০ সালের ৫ মে র্যাব-৩, সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মিনহাজসহ ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই মামলা করেন। এছাড়া আরও অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ‘আই অ্যাম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছেন, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। ওই পেজের অ্যাডমিন শায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ সমাচার, স্বপন ওয়াহিদ, মোস্তাক আহম্মেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচজন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেজটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করছে।
আহমেদ কবীর কিশোর, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন, শাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিং’ এর প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়েছে, তাদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোনে ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনাভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে।