আইন ও আদালত ৫ জানুয়ারি, ২০২১ ১২:২৮

যে কারণে ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বরিশালে গোয়েন্দা পুলিশের নির্যাতনে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিম রেজা হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের বাবা ইউনুস মুন্সি বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে মামলাটি দায়ের করেন।

গোয়েন্দা পুলিশের অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিন এবং তার অজ্ঞাতনামা দুই পুলিশ সহযোগীর বিরুদ্ধে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়।

শুনানি শেষে বিকেল ৩টায় এক আদেশে আদালতের বিচারক মো. আনিছুর রহমান আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পিবিআইর একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে, গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিনকে গোয়েন্দা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করে মেট্রো পুলিশ লাইনে  সংযুক্ত করা হয়েছে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন মন্টু জানান, গত ২৯ ডিসেম্বর রাত ৮টায় শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিম রেজাকে নগরীর সাগরদী হামিদ খান সড়ক থেকে ধরে নিয়ে যায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মহিউদদ্দিন। রাত সাড়ে ১০টায় তাকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে হাজির করা হয়। এই সময়ের মধ্যে রেজাউল করিমকে শারীরিক নির্যাতন করেন উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিন। এমনকি, গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে তীব্র শীতের মধ্যে তাকে খালি গায়ে রাখা হয়।

এদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১৩৮ গ্রাম গাঁজা এবং ৪ পিস নেশাজাতীয় ইনজেকশন পাওয়ার অভিযোগে উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিন রেজাউলকে কোতয়ালী মডেল থানায় সোপর্দ করে মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরদিন ৩০ ডিসেম্বর ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে রেজাউলকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। কারাগারে মেডিকেল সার্টিফিকেটসহ রেজাউলকে জমা দেয় পুলিশ।

আদালতের নির্দেশে কারা কর্তৃপক্ষ কারা অভ্যন্তরে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়। সেখানে ১ জানুয়ারি রেজাউলের অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে তাকে কারা হাসপাতাল থেকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ২ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেজাউলের মৃত্যু হয়। পিবিআইর তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হবে এবং বাদী ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশা করেন অ্যাডভোকেট মহসিন মন্টু।

তবে রেজাউলের মৃত্যুর পর থেকে লাপাত্তা রয়েছেন উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিন। ওইদিন থেকে তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। মহিউদ্দিনের অবস্থান বা তার রহস্যজনক আত্মগোপন সম্পর্কে সাংবাদিকদের কোনো সদুত্তর দেননি পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।