ডেস্ক রিপোর্ট।।
লালদিঘী নয় গম্বুজ মসজিদ। সবার কাছে লালদিঘী মসজিদ নামেই পরিচিত। রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নে এই মসজিদের অবস্থান। বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এই মসজিদ। বদরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘী নামক স্থানে অবস্থিত বলে মসজিদটি স্থানের নামেই নামকরণ করা হয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনামলে সর্বপ্রথম মসজিদটি আবিষ্কৃত হয়। পরবর্তীতে জরাজীর্ণ স্থানটিকে পরিষ্কার ও মসজিদটির সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহার করতে শুরু করেন স্থানীয়রা। মসজিদটি আবিষ্কারের সময় সেখানে এর নির্মাণকাল সম্পর্কে কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি। এ কারণে এর নির্মাণকাল সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য জানা যায় না।
তবে কিংবদন্তী অনুসারে জনৈক আসালাত খাঁ মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির মূল দরজার ওপরের অংশে একটি দাগ দেখে ধারণা করা হয় সেখানে খুব সম্ভবত মসজিদটির নাম ও নির্মাণফলক বসানো ছিলো, যদিও সেটি পাওয়া যায়নি।
তবে মসজিদের বর্তমান ইমাম হাফেজ মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ১২০৪ বঙ্গাব্দে জমিদার আসালাত খাঁ ও তার স্ত্রী দিলারা খাঁ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে রংপুরে এসে এই নয় গম্বুজ মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের ভেতর তাদের মাজারও রয়েছে।
মসজিদটি তৈরির সময় এতে শুধু ইট ও চুনসুড়কি ব্যবহার করা হয়েছে। এর ভিতর গরমকালে ঠান্ডা ও শীতকালে গরম থাকে।
নয় গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের প্রতি বাহুর দৈর্ঘ্য ৯.৪৫ মিটার। পুরো মসজিদটাই একটি বেদীর উপর বসানো। বেদী বা মঞ্চটির উচ্চতা ১ মিটার। এক মিটার বেদীর অর্ধেকটাজুড়ে রয়েছে মসজিদ ও বাকী অর্ধাংশ আজান দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হত বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
মসজিদটির সামনে রয়েছে বড় একটি প্রবেশপথ। মসজিদের অংশে থেকে বেদীর অপর অংশে পৌঁছানোর জন্য রয়েছে একটি সিঁড়ি।
লালদিঘী মসজিদ, বদরগঞ্জ, রংপুর, ছবি: বার্তা২৪.কম
মসজিদটির উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দেওয়ালে মোট তিনটি করে ৯টি প্রবেশ পথ রয়েছে। প্রত্যেক দেওয়ালের মাঝের প্রবেশ পথটি অপর দু’টি থেকে কিছুটা বড় আকৃতির।
মসজিদের পশ্চিম দেওয়ালে রয়েছে তিনটি মেহরাব। যার মধ্যে কেন্দ্রীয় মেহরাবটি অপর দু’টির চেয়ে বড় আকৃতির।
১৪ একর বিশাল সম্পত্তিতে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট এই মসজিদ বর্ধিত অংশসহ বর্তমান আয়তন প্রায় ৩৫ শতাংশ। বাকি জমিতে একটি লালদিঘী জান্নাতবাগ হাফিজিয়া এতিমখানা ও ফোরকানিয়া মাদরাসা, ঘাট বাঁধানো ছোট একটি পুকুর, বকরস্থান, মাদরাসা মাঠ ও সাপ্তাহিক হাট বসানোর জাগয়া রয়েছে।