বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ১৩ নভেম্বর, ২০২০ ০১:১৫

দেশে ব্যান্ডউইথের বাজার গড়তে চায় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট

টেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ থেকে সেবা নিতে চেয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ফিলিপাইন ও নেপাল। কিন্তু বিশ্বে ব্যান্ডউইথের চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি থাকায় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের ব্যান্ডইউথ যে দামে বিক্রি হওয়ার কথা ছিল, সে দাম পাওয়া যায়নি। যার ফলে দেশের বাজারেই  চাহিদা বাড়ানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. শাজাহান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের প্রচুর স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইথ অবিক্রীত অবস্থায় রয়েছে। আমরা এখন অভ্যন্তরীণ বাজার বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছি। বিশ্বে এখন স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইথের চাহিদার চেয়ে সাপ্লাই বেশি। ফলে দাম অনেক কমে গেছে। ফিলিপাইন ও নেপালের অফার ছিল। দাম কমে যাওয়ায় তাদের আগ্রহে সাড়া দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দেশের ভেতরে যে সম্ভাব্য বাজার রয়েছে, তা খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে।‘

তিনি জানান, এখন ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের এটিএম বুথগুলো চলছে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। আরও কয়েকটি ব্যাংক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পাইপলাইনে রয়েছে সেবা নেওয়ার জন্য।  

ড. শাজাহান মাহমুদ বলেন, আমাদের প্রাথমিক ধারণা ছিল ৫-৭ বছরের মধ্যে স্যাটেলাইট নির্মাণ খরচ (প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা) উঠে আসবে। এখন মনে হচ্ছে দেরি হবে। দেশের বাইরে ট্রান্সপন্ডার ভাড়া দিতে পারলে খরচ পরিকল্পনা মাফিক সময়ের মধ্যেই উঠে আসতো। এখন মনে হচ্ছে সময় বাড়বে।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটে রয়েছে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার। এরমধ্যে সি ব্যান্ডে রয়েছে ১৪টি। এর অর্ধেক কেবল বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে কে-ইউ ব্যান্ডে রয়েছে ২৬টি ট্রান্সপন্ডার। এরমধ্যে এক-তৃতীয়াংশ বিক্রি হয়েছে। টেলিমেডিসিন, টেলিএডুকেশন সেবা, দুর্গম এলাকা, চরাঞ্চল, ছিটমহলসহ বিচ্ছিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট সেবা, ডাটা কানেক্টিভিটি, ভিডিও কনফারেন্স, ইত্যাদি সেবা চালু হলে স্যাটেলাইটের ব্যবহার বাড়বে বলে মনে করছে বিএসসিসিএল।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১১ মে যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডোর কেপ কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণ করা হয়। এরপর ৩৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিরক্ষরেখার ১১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রিতে স্থাপিত হয় এটি। বিভিন্ন কারিগরি পরীক্ষা শেষে স্যাটেলাইটের নির্মাতা ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালাস অ্যালেনিয়া ওই বছরেরই ৯ নভেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে।