শিক্ষা ১১ নভেম্বর, ২০২০ ১০:১৮

৭৩ বছরে মাস্টার্স পাস করলেন রওশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯৬৫ সালে মাধ্যমিক ও ১৯৭০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস তারপর চলে আসেন শিক্ষকতা পেশায়। চাকরিরত অবস্থায় ১৯৮৫ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে পাস করেন বিএড। ২০০৮ সালে অবসরের পর উচ্চশিক্ষার আগ্রহ থেকে ২০১৭ সালে ভর্তি হন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) কোর্সে। এমএসএস চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষে সিজিপিএ ৩ দশমিক ৩৫ পেয়ে হয়েছেন প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন ৭৩ বছর বয়সী রওশন আলী।

পাবনা জেলা সদরের চরতারাপুর ইউনিয়নের তারাবাড়িয়া গ্রামে রওশন আলীর (৭৩) বাড়ি। কর্মজীবনে জেলার সুজানগর উপজেলা সদরের শহীদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। অবসর গ্রহণের পর থাকছেন নিজ বাড়িতেই।

রওশন আলী জানান, তাঁর জন্ম ১৯৪৮ সালে। ছোটবেলা থেকেই উচ্চশিক্ষার প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ ছিল। মাধ্যমিক পাস করার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে ভেবেছিলেন উচ্চশিক্ষার সাধ পূরণ হবেনা।  সুস্থ হওয়ার পরেই পাস করেন উচ্চমাধ্যমিক। এরপর শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন শহীদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে। কর্মজীবনের ব্যস্ততাতেও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ পিছু ছাড়েনি তাঁর। চাকরিরত অবস্থায়ই প্রাইভেট প্রোগ্রামের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে স্নাতকে (ডিগ্রি পাস কোর্স)। দুই বছর পরই শেষ করেন বিএড কোর্সও।

এরপর ব্যস্ত সময় কেটেছে রওশন আলী। হঠাৎ করেই একদিন চোখে পড়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সের বিজ্ঞাপন। কোনো কিছু না ভেবেই ভর্তি হয়ে যান কোর্সে। নিয়ম মেনে করতে থাকেন ক্লাস। অংশ নেন পরীক্ষায়। গত ৮ নভেম্বর তাঁর চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। রওশন আলী পাস করেছেন ওই বছরের সন্ধ্যাকালীন কোর্সের সেরা ছাত্র হিসেবে।

তিনি বলেন, ‘পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এমফিল করার অপেক্ষায় আছি। ঠিকঠাকমতো এমফিল শেষ করতে পারলে ইচ্ছা আছে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের।’

রওশন আলীর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রীতম কুমার দাস বলেন, ‘জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তিনি শিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ ছাড়েননি। কঠোর অধ্যবসায় করে ভালো ফল করেছেন। এটি যেমন অনুকরণীয়, তেমন অনুপ্রেরণারও বিষয়। আমরা তাঁর সাফল্য কামনা করি।’