খেলাধুলা ৮ অক্টোবর, ২০২০ ০৩:৩৫

আইপিএলে চেন্নাইকে হারাল কলকাতা

স্পোর্টস ডেস্ক

রাহুল ত্রিপাঠির সৌজন্যে ৫২ রান তুলেও কলকাতা নাইট রাইডার্স শেষ পর্যন্ত করতে পারলো ১৬৭ রান। ধারাভাষ্যকারেরা বলছিলেন কলকাতার রান কম হয়ে গেছে গোটা সাত বা আটেক। ১৭৪ বা ১৭৫ হলে চেন্নাই সুপার কিংসকে নিশ্চিত আটকে ফেলা যেত। তারপরও দেখা যাক…।

আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়াম দেখলো এটাই তাড়া করতে ব্যর্থ ধোনির চেন্নাই। ১৫৭ রানে থেমে ১০ রানে হারলো আগের ম্যাচই দারুণ একটা অনুপ্রেরণাদায়ী জয় পাওয়া দলটি।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পৃথিবীতে আন্দ্রে রাসেল সত্যিকারের এক নায়ক। ব্যাটিংয়ে না পারলে বোলিংয়ে পুষিয়ে দেন, ব্যাটিং-বোলিং কোনটিতেই অবদান রাখতে না পারলে ফিল্ডিংয়ে কিছু দেওয়ার চেষ্টা করেন। বুধবার আবুধাবিতে ব্যাটিংয়ে মোটেই ভালো করতে পারেননি।

চার বল খেলে ২ রান করে শার্দূল ঠাকুরের শিকার ধোনির গ্লাভসে। ‘দ্রে-রাস’ পুষিয়ে দিলেন বোলিংয়ে গিয়ে।

তিন ওভারে চেন্নাই সুপার কিংসকে তুলতে হবে ৩৯ রান, হাতে ৬ উইকেট- কলকাতা নাইট রাইডার্স অধিনায়ক দিনেশ কার্তিক তাকে বল দিলেন ১৮তম ওভারে। দিলেন মাত্র ৩ রান, কভারে ক্যাচ দারুণ আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকা স্যাম কারেন।

ম্যাচটি ওখানেই হাতের মুঠোয় এসে যায় কলকাতার। মন্থর হয়ে পড়া উইকেটে এমন চাপের মধ্যে শেষ দুই ওভারে ৩৬ রান করা প্রায় অসম্ভব। শেষ ওভারে চেন্নাইকে করতে হতো ২৬ রান। ৬, ৪ ও ৪- রাসেলের করা শেষ তিন বলে রবীন্দ্র জাদেজা ১৪ রান নিয়ে দুটি মাত্র স্কোরিং শটের দূরত্বে আনলেন দলকে।

তবে রণকৌশল আর খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত নৈপুন্যের ঝলক কলকাতা অধিনায়ককে ম্যাচটি জিতিয়েছে অনেক আগেই। নির্দিষ্ট করে বললে ১২তম ওভারে সুনীল নারাইনের মাধ্যমে আক্রমণে স্পিন ফিরতেই।

এক উইকেটে ১১ ওভারেই ৯৪ রান, মনে হচ্ছিল জয়ের দিকে মসৃন ছুটে চলেছে চেন্নাইয়ের ক্যারাভান। এমন সময় আক্রমণে আনঅর্থোডক্স অফস্পিনার নারাই। ঝুঁকিপূর্ণ চাল। কিন্তু ক্যারিবিয়ান স্পিনার শেন ওয়াটসন ও অম্বাতি রায়ডুকে দিলেন মাত্র ৫ রান।

পরের ওভারের প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ ৩৯ বলে ফিফটি করা ওয়াটসন। ডিআরএস নিয়েও বাঁচতে পারেননি। তার আগের ওভারে তরুণ পেসার নগরকোটির বলে ডিপ মিডঅনে ক্যাচ তুলে দিয়ে গেছেন রায়ডু।

চেন্নাইকে ভরসা দিতে পারেননি ধোনিও। বোল্ড হয়ে গেছেন লেগস্পিনার বরুণ চক্রবর্তীর বলে। চেন্নাইয়ের ৫টি উইকেট নিয়েছেন পাঁচ বোলার। হাতে পাঁচ উইকেট জমিয়ে রেখেও চেন্নাই থেমে গেছে ১৫৭ রানে।

এর আগে টসজয়ী কলকাতাকে ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোরে নিয়ে গেছেন রাহুল ত্রিপাঠি। ওপেনার নারাইনকে নিচে ঠেলে নিজের প্রিয় জায়গা ওপেনিংয়ে ফিরে কী অসাধারণ এক ইনিংসই না খেলেছেন। ১৬.৫ ওভার পর্যন্ত টিকে থেকে ম্যাচেরই সর্বোচ্চ ৮১ রান করেছেন ৫১ বলে।

ম্যান অব দ্য ম্যাচের ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ৩ ছক্কা। ত্রিপাঠির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ রান করেছেন নারাইন ও প্যাট কামিন্স। প্রথমে ধাক্কা দিয়েছেন শার্দূল ঠাকুর, মাঝের ওভারগুলোতে এসে কলকাতার ইনিংস বেপথু হয়েছে লেগস্পিনার কর্ণ সিং ও পেসার স্যাম কারেনের বোলিংয়ে। এরা তিনজনই নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। শেষদিকে ধোনির দুর্দান্ত কিপিংয়ের সহায়তায় তিন উইকেট নিয়েছেন ডোয়াইন ব্রাভো। আইপিএলে সবচেয়ে বেশিবার শিরোপা স্বাদ পেলেও কর্ণর জায়গা বেশিরভাগ সময়ই হয় রিজার্ভ বেঞ্চে। পীযূষ চাওলাকে সরিয়ে দলে ঢুকে দুর্দান্ত বোলিং করলেন ম্যাচে, তারপরও তিনি পরাজিত দলে!

পাঁচ ম্যাচে তৃতীয় জয় কলকাতাকে তুলেছে পয়েন্ট তালিকার তিনে। ষষ্ঠ ম্যাচে চতুর্থ হার চেন্নাইয়ের সামনে আবারও আকঁলো প্রশ্নবোধক চিহ্ন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

কলকাতা: ২০ ওভারে ১৬৭ (ত্রিপাঠি ৮১, কামিন্স ১৭*, নারাইন ১৭, ব্রাভো ৩/৩৭, কর্ণ সিং ২/২৫, কারেন ২/২৬, ঠাকুর ২/২৮) ও চেন্নাই: ২০ ওভারে ১৫৭/৫(ওয়াটসন ৫০, রায়ডু ৩০, জাদেজা ২১*, রাসেল ১/১৮, নগরকোটি ১/২১, চক্রবর্তী ১/২৮, নারাইন ১/৩১)