স্বাস্থ্য সেবা ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০৪:২৭

৫ টাকায় চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পরে অসন্তুষ্ট রোগীরা !

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

মাত্র ৫ টাকার টিকিটে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয় এখানে। এমনকি সরবরাহ সাপেক্ষে ফ্রি ওষুধ, স্বল্প খরচে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুবিধাও রয়েছে। তবে সুবিধার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি। এজন্য সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন রোগীরা। অন্যদিকে অতিরিক্ত রোগী নিয়ে মাঝেমধ্যেই হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের।
 
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ কেন্দ্রীয় চর্ম ও সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিত্র এটি। যা স্থানীয়দের কাছে  আমেরিকান হাসপাতাল নামে পরিচিত। 

১৯ আগস্ট সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেমিপাকা কয়েক কামড়ার  আমেরিকান হাসপাতালের গেট খোলার অনেক আগে থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে রোগীর ভিড়।  নারী-পুরুষ উভয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও পুরুষের তুলনায় নারী রোগীর সংখ্যা বেশি।

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সেবা চালু থাকে। কিন্তু ১টার আগে টিকিট দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে পাঁচজন জন চিকিৎসকসহ ২৩ স্বাস্থ্যকর্মী এখানে দায়িত্ব রয়েছেন। স্বল্প খরচে তিন ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুবিধা রয়েছে।

সোমবার (১৯ আগস্ট) ৫১০ জন রোগী সেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩২০ জন নারী ও ২১০ জন পুরুষ।

চিকিৎসার মান নিয়ে সেবা গ্রহিতাদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, চিকিৎসকরা ঠিকমতো রোগী দেখেন না, ওষুধও দেয় না। এখানে হয়রানি ছাড়া কিছুই মেলে না। বোয়ালখালীর গোমদণ্ডী এলাকা থেকে  ত্বকের সমস্যার নিয়ে আশা যুবক নুরুল আনোয়ার সেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সুনাম শুনে আসছিলাম। কিন্তু এখানে কোনও চিকিৎসা নেই। রোগের কথা না শুনে চিকিৎসক ওষুধ লেখেন।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সামিরা জামালের সাথে এবিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন , মাত্র ৫ জন চিকিৎসক আছেন। প্রতিদিন গড়ে চারশ থেকে পাঁচশ রোগী হয়। নার্স সংকট। ফলে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিমে পড়তে হয়।

‘৫ জন চিকিৎসকের পক্ষে এতরোগীকে চিকিৎসা দেওয়া কষ্টকর। তবুও চিকিৎসকরা তা করছেন। এ ছাড়া জনবল সংকটতো রয়েছে। অফিস সহায়কের অভাব। নিরাপত্তাপ্রহরী নেই, একজন অফিস সহায়ককে রাতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক-সরঞ্জামের অভাবসহ অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। মজুদ থাকলে ওষুধ দেওয়া হয়। পাশাপাশি সময়ের মধ্যে আসলেও রোগী ফেরত দেওয়া হয় না।

জনবল বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে ডা. সামিরা জামাল বলেন, ঐতিহ্যগত কারণে এ চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়মিত রোগীর চাপ বেশি। তবে সে তুলনাই সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। উল্টো যেসব সুবিধা ছিলো, তা কমতেছে। কিন্তু রোগীর কথা বিবেচনায় এখানে আরও চিকিৎসক দেওয়া দরকার। পাশাপাশি অন্যান্য জনবল বৃদ্ধি জরুরি।’

উল্লেখ্য, ১৯৫৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ চিকিৎসাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। প্রাথমিকভাবে এ চিকিৎসাকেন্দ্রে বন্দর সংশ্লিষ্টদের চিকিৎসা দেওয়া হতো। পরে সেটি সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। শুরুতে এ চিকিৎসাকেন্দ্রে বিদেশি চিকিৎসকরা সেবা দিতো। ফলে সেটির নাম আমেরিকান হাসপাতাল নামে পরিচিত পায়।

এ চিকিৎসাকেন্দ্রটি জনবলসহ যাবতীয় প্রশাসনিক কাজ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে। তবে ওষুধসহ চিকিৎসা সামগ্রী সরাসরি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়।