জাতীয় ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০২:২৩

রংপুরে স্পিডবোট দিয়ে পানিবন্দিদের উদ্ধার, ১০০ বছরে এতো বৃষ্টি হয়নি

টানা ১৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে অচল হয়ে পড়েছে রংপুর শহর। পানিতে সয়লাব নগরীর ঘর-বাড়ি, অলি-গলি, রাস্তা-ঘাট, খেলার মাঠ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও কবরস্থান। পানিতে অর্ধেক অংশ ডুবে গেছে মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার গাড়ি। ১’শ বছরের রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টিতে রোববার পানিবন্দিদের উদ্ধারে নগরীর রাস্তায় স্পিডবোট নামিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

শনিবার রাত পৌনে ৯টা থেকে রংপুরে বৃষ্টি শুরু হয়। প্রথমে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও সাড়ে ৯টার পর থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। সারা রাত অবিরাম বর্ষণ শেষে রোববার সকালে বৃষ্টি থামে। রংপুর নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণের একমাত্র পথ শ্যামাসুন্দরী খাল বৃষ্টির পানিতে টইটম্বুর হয়ে পড়ে। ড্রেনের মাধ্যমে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, কেরানীপাড়ার, মুন্সিপাড়া, গোমস্তপাড়ার, লিচু বাগান, পায়রা চত্বর, সেনপাড়া, গুপ্তপাড়া, ঠিকাদারপড়া, আলমনগর, বাবুপাড়া, আশরতপুর, চক বাজার, পূর্ব শালবন, শালবন মিস্ত্রিপাড়া, শিয়ালুর মোড়, মাস্টারপাড়া, সিগারেট কোম্পানী মোড়, কামাল কাছনা, তিন মাথাসহ প্রায় সব এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পানি ঢুকে পড়ে ঘর-বাড়িতে। শ্যামাসুন্দরী খালে পানি বৃদ্ধির কারণে নগরীর ছোট নুরপুর কবরস্থানেও পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে কবরের উপরে ভাসছে বর্ষার পানি। 

নগরীর পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে রোববার সকাল থেকে মাঠে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। তারা সারাদিনে স্পিডবোটে করে শতাধিক সন্তান সম্ভবা মা, শিশু ও বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে এসেছে। পানি বাড়লে এ উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

টানা ১৪ ঘণ্টার অবিরাম বর্ষণ রংপুরে ১’শ বছরের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর মাসে গড়ে প্রতি বছর ২২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। তবে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুরে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৩৩ মিলিমিটার। ফলে এ বৃষ্টিপাত অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ করেছে বলছে আবহাওয়া অফিস।