অপরাধ ও দুর্নীতি ২৬ নভেম্বর, ২০১৯ ১১:৩২

যৌন নিপীড়নে ব্যর্থ হয়ে শিশুকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় যৌন নির্যাতনে ব্যর্থ হয়ে ডাব চুরির অপবাদ দিয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ বিশ্বাস শামীমকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিশুর পরিবার।

এ ব্যাপারে থানা পুলিশ অভিযোগ না নেওয়ায় নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর বাবা সাইফুল বিশ্বাস বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে  মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিজ্ঞ আদালত দায়িত্ব দিয়েছেন শিবালয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে।

এদিকে অভিযুক্ত অলি আহমেদ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে শিশুটির পরিবার।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখ রাত নয়টার দিকের। সেদিন শামীম বাড়ির কাছের দোকানে মশার কয়েল কিনতে যায়। সেখানে দেখা হয় প্রতিবেশী ও সম্পর্কে দাদা অলি আহমেদের (৪০) সঙ্গে।  জরুরি কথা আছে বলে অলি আহমেদ তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়ির লোকজন পাড়ার একটি গানের আসরে যাওয়ায় অলি আহমেদের বাড়িতে তখন কেউ ছিল না। কথাবর্তার একপর্যায়ে অলি আহমেদ শামীমকে বলাৎকারের চেষ্টা করেন।

শামীমের চিৎকার এবং যৌন নিপীড়ন করতে ব্যর্থ হয়ে অলি আহমেদ তাকে মারপিট শুরু করেন। পরে উঠানের একটি  গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধেও মারধর করেন। শামীমের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে তার বিরুদ্ধে ডাব চুরি করার অভিযোগ তুলেন অলি আহমেদ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সাইফুল বিশ্বাস তার ছেলে শামীমকে সেখান থেকে উদ্ধার করে শিবালয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। দুদিন চিকিৎসার পর শামীমকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে শিবালয় থানায় অভিযোগ করতে গেলে সাইফুল ইসলামকে ফিরিয়ে দিয়ে কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে গেল ২৭ অক্টোবর সাইফুল বিশ্বাস বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত শিবালয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

তদন্ত কর্মকর্তা ও শিবালয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান জানান, গেল ২০ নভেম্বর বাদী, ভুক্তভোগী শিশুসহ পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শিশুটিকে  নির্যাতনের ছবি ও তাকে হাসপাতালে ভর্তির ছাড়পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।  প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। দুই একদিনের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কোর্টে পেশ করা হবে।

নির্যাতিত শিশুর বাবা সাইফুল বিশ্বাস জানান, অলি আহম্মেদ সমাজে প্রভাবশালী। মামলা করায় এখন সে ও তার পরিবারের লোকজন মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে।

তবে অলি আহমেদ যৌন নির্যাতন চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।  ডাব চুরি করায় শামীমকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেছেন বলে স্বীকার করেন। শিশুটির পরিবারকে কোনও ধরনের হুমকি দেননি বলে তিনি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই ধরনের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করতে কেউ তার থানায় যায়নি। থানায় সিসি ক্যামেরা আছে। কেউ যদি চায় চেক করে দেখতে পারেন।