অপরাধ ও দুর্নীতি ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ১২:৫৯

নরসিংদীতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ডাকাতির নাটক

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

নরসিংদীর হাজিপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অভিনব কায়দায় ডাকাতির নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে। আর ডাকাতির নাটক সাজিয়ে নিজেরাই পুলিশের হাতে ফেঁসে গেছেন । এঘটনায় অভিযুক্ত ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে নরসিংদীর হাজীপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর এলাকার রুপচান মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

আটককৃতরা হলেন, নরসিংদীর বাদুয়ারচর গ্রামের রুপপচান (৪৫), আওয়াল (৫৫), সাত্তার (৫০), হানিফা (৩০), মোজাহিদ (২০), সাকিব (১৭), মোমেনা খাতুন (৪২), মিনার (২৫), হিরন মিয়া (৫৫) সহ আরো ২ জন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নরসিংদীর হাজিপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর গ্রামে  জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সেলিম ভূইয়ার সাথে একই গ্রামের রুপচান মিয়ার দন্ধ চলে আসছিল। দন্ধের জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে আদালতে মামলা পাল্টা মামলা চলছিল। এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রুপচান মিয়া লোকজন নিয়ে জমিতে হাল চাষ করতে যায়। ওই সময় প্রতিপক্ষ সেলিম ভ‚ইয়ার লোকজন বাধা দেয়।  এরই জের ধরে  মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রুপচান মিয়া ও তার লোকজন বাড়িতে ডাকাত পড়েছে উল্লেখ করে মসজিদে মাইকিং করে। ওই সময় রুপচান মিয়া ও তার লোকজন ব্লেড দিয়ে নিজেরাই হাত কেটে রক্তাক্ত করে। পরে ডাকাতের খবরে গ্রামবাসী বের হয়ে আসে। এসময় চারপাশে ঘেরাও দিয়ে মোজাহিদ ও  সাকিব নামে  দুই জনকে আটক করে পুলিশে দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটককৃত দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ওই সময় তারা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতির নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো ৯ জনকে আটক করে। পরে এ ঘটনার বিচারের দাবীতে গ্রামবাসী সদর মডেল থানায় জড়ো হয়।

বাদুয়ারচর গ্রামের বাসিন্দা অলিউল্লাহ বলেন, মসজিদের মাইকে ডাকাতির খবর পেয়ে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে রুপচান মিয়ার বাড়ির লোকজনই নাটক সাজিয়েছেন। পরে পুলিশ এসে এর সত্যতা পেেেয় তাদের আটক করে নিয়ে যায়।

সেলিম ভূইয়া বলেন, রুপচান মিয়ার সাথে আমাদের জমি নিয়ে দন্ধ চলছিল। সন্ধায় তারা জোর পূর্বক আমাদের জমিতে হালচাস দিতে আসে। ওই সময় আমরা বাধা দেই। এ ঘটনায় আমাদের শায়েস্তা করতে ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে। এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে নিজেরাই নিজেদের রক্তাক্ত করে। পরে পুলিশ এলে ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। আমি তাদের বিচার চাই। তবে রুপচান মিয়া পুলিশের হাতে আটক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

নরসিংদী মডেল থানার এস আই সুমন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রাতে টহলরত অবস্থায় থাকাকালে মসজিদের মাইকিংয়ে শুনতে পাই ডাকাতির খবর। সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে গিয়ে ২ জনকে আটক করে জানতে পারি ডাকাতির ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য নিজেরা ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে। এবং থানায় মামলা করার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো। পরে হাসপাতাল থেকে আরো ৯ জন সহ ১১জনকে আটক করা হয়। 

সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দুজ্জামান বলেন, জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এরই জেরে তাদের থানায় আনা হয়েছে। সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।