রাজনীতি ১২ অক্টোবর, ২০১৯ ০৯:৩৪

পাগলা মিজানের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

ক্যাসিনো কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিজান উরফে পাগলা মিজানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানায় র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবদুল জব্বার বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ১৫।

গত ১১ অক্টোবর (শুক্রবার) ভোর রাতে শ্রীমঙ্গলের গুহ রোডের লন্ডন প্রবাসী ফজলুর রহমানের বাসা থেকে ঢাকা র‌্যাব-২ ও শ্রীমঙ্গল র‌্যাব ক্যাম্প-৯ এর সদস্যরা তাকে আটক করে। এরপর পাগলা মিজানকে সকালেই ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আটককৃত পাগলা মিজানের ঘুমানোর বিছানার নিচ থেকে গোলাপি রঙয়ের শপিং ব্যাগের ভেতরে রক্ষিত একটি বিদেশি পিস্তল যার গায়ে ইংরেজী অক্ষরে খোদাইকৃত ৭.৬৫ ট্রেন্টড মেইড ইন ইউএসএ নং ১১০, ওনলি আরমি সাপ্লাই (7.65 TRAND. MAID IN USA No. 110. Only Army Supply) লেখা রয়েছে।

এসময় ৪ রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি ম্যাগাজিন, দুই লাখ নগদ টাকা ও হানিফ পরিবহনের একটি টিকিট জব্দ করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযানের পরপরই পাগলা মিজানকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন র‌্যাব সদস্যরা। শনিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানায় মিজানের অনুপস্থিতিতেই অস্ত্র আইনে মামলাটি রুজু করা হয়।

দুপুরে শহরের যে বাসা থেকে মিজান আটক হয়েছে গুহ রোডের সেই বাসাটির নাম রহমান মঞ্জিল। সুনসান বাসাটিতে ৭০ বছর বয়সী নূরজাহান বেগম তার বড় মেয়ে সুলতানা ও একজন গৃহকর্মি নিয়ে থাকেন।

নূরজাহানের স্বামী ফজলুর রহমান চৌধুরী দুই ছেলে সোহেল রহমান ও সুমন রহমানকে নিয়ে ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ শহরে বসবাস করেন। ছোট মেয়ে সাহানা বেগম আমেরিকা প্রবাসী।

নূরজাহান বেগম তার বড় মেয়ে সুলতানার সঙ্গে শ্রীমঙ্গলে থাকলেও সুলতানা বেশীরভাগ সময় সন্তান নিয়ে ঢাকার শংকর জাফরাবাদের স্বামীর বাসায় থাকেন।

শ্রীমঙ্গলের এই রহমান মঞ্জিল থেকে ক্যাসিনো কাণ্ডের আলোচিত ঘটনায় পাগলা মিজান র‌্যাবের হাতে আটক হওয়ার পর থেকে বাসাটি ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহল বেড়ে গেছে।

আজ দুপুরে সুনসান বাসার ভেতরে প্রবেশ করলে নূরজাহান বেগম এ প্রতিবেদককে অভ্যর্থনা জানান। নুরজাহান বেগম বলেন, মিজান তার বড় মেয়ে সুলতানার মৃত স্বামী মোস্তাক আহমেদের বন্ধু ছিলেন। এই বন্ধুত্বের সূত্র ধরে পূর্বে মিজান শ্রীমঙ্গলে আমাদের বাসায় আসা যাওয়া করতেন। সে দীর্ঘ ৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার বিকালে আমাদের বাসায় আসেন।

পরের দিন সিলেট মাজার জিয়ারতে যাবার কথা বলেছিল মিজান। বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোর রাতে র‌্যাবের সদস্যরা বাসায় ডাকা ডাকি করলে আমি গেট খুলে দেই। এসময় র‌্যাব কর্মকর্তারা আমাকে বাসায় কোন অতিথি রয়েছে কিনা জানতে চায়।

আমি তাদের জানাই আমার মেয়ের জামাইয়ের এক বন্ধু ঢাকা থেকে এসেছেন। সে এখন ঘুমিয়ে আছেন। পরে র‌্যাব সদস্যরা ভেতরে প্রবেশ করে মিজানকে আটক করে নিয়ে যান। নূরজাহান বেগম জানান, মিজান ক্যাসিনোর ঘটনায় কোন অপরাধী বা পুলিশ তাকে খুঁজতে পারে এ বিষয়ে আমরা কিছ্ইু জানতাম না। কেবল মেয়ের স্বামীর বন্ধু হিসেবে তাকে চিনতাম জানতাম

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) সোহেল রানা র‌্যাবের কর্মকর্তা কর্তৃক পাগলা মিজানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এজাহার পেয়েছি, তদন্ত অফিসার তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন’।

শ্রীমঙ্গল র‌্যাব -৯ এর কোম্পানী কমান্ডার এএসপি আবদুল খালেক জানান, ‘এখন কিছু বলতে পারবো না, ঢাকা র‌্যাবের নির্দেশনায় মামলা হয়েছে। এনিয়ে পরে বুঝে শুনে বক্তব্য দিবো’ বলে তিনি জানান।

জানা যায়, পাগলা মিজান শ্রীমঙ্গল এসে সীমান্ত পারি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।