অর্থ ও বাণিজ্য ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ০৫:০৩

অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশেরও বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রতি মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করে। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, বছরের মে মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল দশমিক ৪২ শতাংশ। জুনে দশমিক ৫৬ এবং জুলাইয়ে দশমিক ৪৮ শতাংশ। তবে জুলাইয়ের পর গত দুই মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করেনি বিবিএস পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারের লুকোচুরির মধ্যে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন জানিয়েছে, দেশে চলতি (অক্টোবর) মাসে মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশেরও বেশি।
সংগঠনের তথ্য গবেষণা পরিষদ গত দুই মাসে একটি জরিপ চালিয়েছে। এতে ১০০ জন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দোকানির সঙ্গে কথা বলে ডাটা তৈরির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি বাড়ার তথ্য জানিয়েছে।

 শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে দারুস-সালাম আর্কেডে সবুজ আন্দোলনের উদ্যোগে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি, বিদ্যুতের ঘাটতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিতে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় তথ্য তুলে ধরা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার। তিনি বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি শতাংশ। চীনে শতাংশ, যুক্তরাজ্যে শতাংশ, ইউরোপের ১৯ রাষ্ট্রে সাড়ে শতাংশ, জার্মানিতে প্রায় শতাংশ। এছাড়া জাপানে শতাংশের কাছাকাছি, পাকিস্তানে ১৫ শতাংশের বেশি এবং পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে মূল্যস্ফীতি প্রায় শতাংশ।

বাপ্পি সরদার বলেন, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ফলে তেল উৎপাদনকারী সব রাষ্ট্র অধিক মুনাফার জন্য চাহিদার থেকে কম তেল উৎপাদন করছে, যাতে করে আগামীতে অধিক মুনাফা করতে পারে।

সংগঠনটি জানায়, বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৪২-৫১ শতাংশ। পেঁয়াজ ৩৫-৫০ টাকা, ডিম ১১০-১৫০ টাকা, সব মাছের ওপর ৩০ টাকার অধিক, চাল ৬০-৭০ টাকা। এক্ষেত্রে সব পণ্যের ওপরে গত দুই মাসে দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশের বেশি।

সবুজ আন্দোলন বলছে, বিদ্যুতের ঘাটতির ক্ষেত্রে সরকার বিভিন্ন কারণ তুলে ধরলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন কুইক রেন্টাল পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে আজকের দুরবস্থা। সরকার নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য কুইক রেন্টাল পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। কিন্তু পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রাখা, নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান না করা, নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ যেমন- রামপাল, রূপপুর পায়রা বন্দরের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে সময়ক্ষেপণ করার ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক অর্থনীতিবিদ . মাহফুজ কবীর, পরিবেশ বিজ্ঞানী . ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হামিদ, সেন্টার ফর গ্লোবাল এনভাইরনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী আব্দুল ওহাব, প্রত্যাশা প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন, এসএমই ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলি জামান।

আলোচনা সভায় অতিথিরা বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, যার ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলার জন্য দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য দরকার প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি অনিয়মের কারণে রিজার্ভের অবস্থা খুবই করুণ।

তারা আরও বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় টেলিভিশনে এরইমধ্যে আমরা দেখতে পেয়েছি, সরকারের সোলার প্যানেল উৎপাদন বরাদ্দে সীমাহীন দুর্নীতি অনিয়মের চিত্র। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের জন্য খোলা মাঠে সোলার সিস্টেম তৈরি, ঢেউ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।

 

 

 

 

 

আমাদের কাগজ/টিআর