ডেস্ক রিপোর্ট
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ নির্দয়ভাবে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, অমানুষিকভাবে এই কর্মসূচিতে পুলিশ ছাত্রদের লাঠিপেটা করেছে। এতে বহু কর্মী আহত হয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে এক সভায় এসব অভিযোগ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করে জিয়া পরিষদ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দী অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল। কিন্তু সমাবেশ শুরুর আগেই পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এতে বিক্ষোভ সমাবেশটি পণ্ড হয়ে যায়।
গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিবাদ করা সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী সরকার এভাবে এই ধরনের প্রতিবাদকে দাবিয়ে দিতে চাচ্ছে। কিন্তু এটা কখনোই সফল হবে না। সাময়িকভাবে হয়তো দাবিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু জনগণের প্রতিবাদকে, জনগণের ক্রোধকে সারা জীবনের জন্য দাবিয়ে রাখা যায় না।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, অতীতেও স্বৈরাচারেরা এই চেষ্টা করেছে। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান এবং বাংলাদেশের এরশাদকে দেখেছি। কিছুদিন পর্যন্ত স্বৈরাচারেরা গায়ের জোরে এভাবে পুলিশি অ্যাকশন দিয়ে টিকে থাকতে পারে। বেশি দিন টিকতে পারে না।
সরকার গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরেছে মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, একদিন জনগণ ইস্পাত কঠিন ঐক্য তৈরি করে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করবে। দেশের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, জিয়াউর রহমানের খেতাব কাগজ থেকে মুছে ফেলা যেতে পারে। কিন্তু জিয়াউর রহমান যে বীর উত্তম, জিয়াউর রহমান যে এই দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা, জিয়াউর রহমান যে দেশে প্রথম স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন, এটা তো এ দেশের মানুষের মন থেকে মুছে দেওয়া যাবে না। অতএব যাঁরা এই চেষ্টা করছেন, বৃথা চেষ্টা করছেন।
প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল উল্লেখ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জামুকা কারও খেতাব কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব করতে পারে না। আমি যদি জিজ্ঞাসা করি এখন কি জামুকা নতুন কোনো বীর উত্তম বা বীর বিক্রম পদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে? পারবে না। নতুন যদি সিদ্ধান্ত নিতে না পারে, খেতাব যারা দিয়ে গেছে তাদের দেওয়া খেতাব বাতিলের এখতিয়ার তাদের নেই।’
যাঁরা বীরশ্রেষ্ঠ, যাঁরা বীর বিক্রম, যাঁরা বীর উত্তম ও বীরপ্রতীক—তাঁরা কারও দয়ায় এসব খেতাব পাননি। তাঁরা সম্মুখযুদ্ধে যুদ্ধ করে এটা অর্জন করেছেন বলে মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম প্রমুখ।