সোশ্যাল মিডিয়া ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৪:৪৮

ফেসবুক খুঁজে দিলো হারানো মাকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে ১২ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মাকে খুঁজে পেয়েছেন ছেলে মাহাবুর রহমান মামুন। গতকাল শনিবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বাজার থেকে মাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান তিনি।

মামুন জনান, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কাছিহারা গ্রামের রফিকুল ইসলাম সরদারের ছেলে তিনি। ১৫ বছর আগে হঠাৎ করে তাঁর মা নূর নাহার বেগম (৪৫) মানসিক রোগী হয়ে যান। ২০০৮ সালে যখন তার বয়স ১১-১২ বছর, তখন কোনো এক রাতে মা নূর নাহার বেগম রাতের আঁধারে কোলের শিশুসন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। তারপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।

মায়ের খোঁজে এলাকায় মাইকিং, স্থানীয় পত্রপত্রিকায় নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তার পরও মা ও ছোট ভাইয়ের কোনো হদিস পাচ্ছিলেন না মামুন।

গত বৃহস্পতিবার মামুন এলাকার পার্শ্ববর্তী কালিগঞ্জ উপজেলার সুশান্ত বিশ্বাসের ফেসবুক আইডিতে হারিয়ে যাওয়া তার মায়ের ছবিসহ একটি পোস্ট দেখতে পান। সেই সূত্র ধরে শনিবার ডুমুরিয়ার চুকনগর বাজারে এসে চিকিৎসক উজ্জ্বল রায়ের সহায়তায় মাকে খুঁজে পান মামুন।

মাকে পেলেও ছোট ভাইয়ের সন্ধান পাননি। তার ধারণা, ছোট ভাইকে হয়তো তার মানসিক প্রতিবন্ধী মায়ের কাছ থেকে কেউ নিয়ে থাকতে পারেন।

দীর্ঘ একযুগ পরে মাকে খুঁজে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মামুন। মাও ছেলেকে দেখে চিনতে পারেন।

একযুগ পর মায়ের সন্ধান পাওয়ায় তাদের পরিবারে চলছে আনন্দের বন্যা। খবর পেয়ে তাদের বাড়িতে হারিয়ে যাওয়া মাকে দেখতে লোকজন ভিড় করছে।

এ বিষয়ে কথা হয় নূর নাহার বেগমকে খুঁজে পেতে সহায়তাকারী চুকনগর মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত ডা. উজ্জ্বল রায়ের সঙ্গে। তিনি জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত পরিচয় এই নারীকে চুকনগর বাজারে ঘোরাফেরা করতে দেখে এবং কথাবার্তার ধরন শুনে লোকজন ভিড় করে। তিনিও উৎসুক হিসেবে তাকে দেখতে এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ শ্যামনগরের কয়েকটি গ্রামের নাম বলেন। তখন তিনি তার একটা ছবি তুলে কালিগঞ্জ উপজেলায় তার এক আত্মীয় সুশান্ত বিশ্বাসের ফেসবুক আইডিতে সেন্ড করে পোস্ট দিতে বলেন। এবং ওই নারীর খোঁজ পেতে তার মোবাইল ফোন নম্বর সংযুক্ত করে দেন।

ফেসবুকে ছবি দেখে নূর নাহার বেগমের ছেলে মামুন এবং অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন চিনতে পারেন। তারা শনিবার ডা. উজ্জ্বল রায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে চুকনগর এলে ওই নারীর সন্ধান পান। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মামুনের হাতে তার মাকে তুলে দেয়া হয়।

 

সূত্রঃ জাগোনিউজ