জাতীয় ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ১০:১১

কী আলোচনা করলেন মোদি-হাসিনা? জানালেন মোমেন

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। গণভবন থেকে শেখ হাসিনা দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদি আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈঠকে অংশ নেন।

পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত ওই বৈঠক নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন।

এসময় তিনি বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে অত্যন্ত খোলা মনে কথা বলেছেন। এতে আমরাই বেশি বলেছি। বিজয় দিবসসহ অন্য দিবসগুলো একত্রে উদযাপন করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটাই আমাদের কূটনৈতির সাফল্য। আমাদের বিজয়কে ভারত তাদের নিজেদের বিজয় মনে করছে। বিজয়ের দিনে এটাই আমাদের অনেক বড় অর্জন।

মোমেন জানান, বাংলাদেশের সব বিষয়ে ভারত অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। দুই দেশের সীমান্তে হত্যা বন্ধের বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একমত হয়েছেন। সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে তিনি অঙ্গীকার করেছেন। সীমান্তে বিএসএফ মারণাস্ত্র ব্যবহার করবে না বলেও তিনি অঙ্গীকার করেছেন।

সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভার্চুয়াল বৈঠকের আগে দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমইও) স্বাক্ষর হওয়ার কথা বলেন। ভারতের পক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী চুক্তিগুলোতে সই করেন।

দুই দেশের মধ্যে যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে সেগুলো হলো বাংলাদেশ-ভারত সিইও ফোরামের টার্ম অব রেফারেন্স, কৃষি খাতে সহযোগিতা, হাইড্রোকার্বন বিষয়ে রূপরেখা, হাতি সংরক্ষণ বিষয়ে সহযোগিতা, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল জাদুঘর নয়াদিল্লি জাদুঘরের মধ্যে সহযোগিতা, হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প চালু বরিশালের স্যুয়ারেজ প্রকল্পের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যখনই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আসবে, ভারত তিন কোটি ভ্যাকসিন বাংলাদেশকে দেবে, যা জনগণকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।

দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে আবদুল মোমেন বলেন, আঞ্চলিক কানেকটিভিটি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সমুদ্রসীমা, বেরুবাড়ী, তিন বিঘা করিডোর সীমানায় ভূমি বিনিময় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন সীমান্ত হত্যাসহ অন্য বিষয়গুলোও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত আমাদের সঙ্গে থাকবে। ভারতও চায় দ্রুত সমস্যার সমাধান। বিদ্যুৎ আদান-প্রদান বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের বিদ্যুৎ বেশি হলে ভারতের কাছে বিক্রি করতে পারব। আবার আমাদের দরকার হলে ভারতের কাছ থেকে কিনতে পারব।

ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার থাইল্যান্ডের মধ্যে একটি সড়ক সংযোগের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

অনেক আলোচনা আশ্বাসের পরও তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি হলো না। সীমান্তে প্রতিনিয়ত বিএসএফ বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করছে। গতকাল বিজয় দিবসেও বিএসএফ একজন বাংলাদেশি নাগরিকের লাশ দিয়েছে। এসব বিষয়ে আপনি হতাশ কি না?

একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মতো আমিও ফ্রাস্ট্রেটেড (হতাশ) তবে আমি আশাবাদী। আশা ছাড়িনি। আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমে এগুলোরও সমাধান হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, ‘কানেকটিভিটি বাড়ানো হলে আমাদেরও লাভ, ভারতেরও লাভ।