বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ২৯ আগস্ট, ২০১৯ ০৬:২১

অক্টোবর থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারে বেসরকারী টেলিভিশন

ইমরান রহমান।।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পহেলা অক্টোবর থেকে দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল একযোগে সম্প্রচার শুরু করবে বলে জানিয়েছে বেসরকারী টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন এটকো। সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান এটকো নেতারা। তারা বলেন খুব শীঘ্রই দেশের ৩৩টি বেসরকারী টেলিভিশন একটি প্ল্যাটফর্মে এসে পে চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, সে সিদ্ধান্তের কথা তারা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। কেবল নেটওয়ার্ক ডিজিলাইজেশন সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের দিক নির্দেশনা দেন। এছাড়া এটকো জন্য নিজস্ব ভবন স্যাটেলাইটের আর্থ স্টেশন প্রতিষ্ঠার জন্য জমি বরাদ্দেরও আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, পহেলা অক্টোবর থেকে সমস্ত টেলিভিশন চ্যানেল্গুলো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার শুরু করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে টেলিভিশন ওনার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সে অনুষ্ঠানে থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- বাংলাদেশের  সম্প্রচার স্যাটেলাইট। এটি ১১ মে ২০১৮ কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্সের ফ্যালকন- ব্লক- রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ৫৭ তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশের তালিকায় যোগ হয় বাংলাদেশ। এই প্রকল্পটি ডাক টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়িত হয়।

উৎক্ষেপণের মাস পর ফ্রান্সের থেলিস এলোনিয়া স্পেস কোম্পানীর থেকে স্যাটেলাইটটি বুঝে নেয় দেশীয় কোম্পানী বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানী লিমিটেড(বিসিএসসিএল) বর্তমানে, গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় অবস্থিত গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- কে নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। 

বিসিএসসিএলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আসার মাধ্যমে এখন থেকে নতুন কোন টিভি চ্যানেল আসলে তাদেরকে আর আর্থ স্টেশন নির্মান করতে হবে না। তারা সরাসরি গাজীপুরে অবস্থিত সজীব ওয়াজেদ জয় গ্রাউন্ড স্টেশনে সংযুক্ত হতে পারবে। এতে তাদের খরচ সাশ্রয় হবে। এছাড়াও বিদেশে ফ্রিকোয়েন্সি বাবদ বিদেশে অর্থ পাঠানোর ধকলও তাদের নিতে হবে না। দেশীয় মূদ্রায় তারা বিসিএসসিলকে পাওনা পরিশোধ করতে পারবে। এমন কি বকেয়া পরিশোধও সহজ হবে। সাধারন দর্শকদের ক্ষেত্রেও টেলিভিশনে বর্তমানে যে ফুটপ্রিন্ট দেখা যায়, তার থেকেও এর মান অনেক ভালো হবে। এছাড়াও স্যাটেলাইটে অতি উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যাবহার করায় ফিলিপাইন নেপাল থেকেও অনুরোধ এসেছে যে তারা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যাবহার করতে চায়। তবে আপাতত কোম্পানী আভ্যন্তরীন চাহিদা মেটানোর দিকে নজর দিচ্ছে। আভ্যন্তরিন চাহিদা মিটিয়ে যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে। তখন তা বিক্রি করা যেতে পারে।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধু- স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মোট ফ্রিকোয়েন্সি ক্ষমতা হলো হাজার ৬০০ মেগাহার্টজ। এর ব্যান্ডউইডথ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে ইন্টারনেটবঞ্চিত অঞ্চল যেমন পার্বত্য হাওড় এলাকায় ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া সম্ভব। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা, টেলিমেডিসিন দূরনিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থা প্রসারেও ব্যবহার করা যাবে বঙ্গবন্ধু- স্যাটেলাইট। বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে। তখন এর মাধ্যমে দুর্গত এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা চালু রাখা সম্ভব হবে।