অপরাধ ও দুর্নীতি ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ১১:১৫

বান্দরবনের সাইরু রিজোর্টে অভিযান, ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে বান্দরবনের সাইরু রিজোর্টে অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। অভিযানে ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ মিলেছে

আজ সোমবার ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল বান্দরবনে পাহাড়ি রিজোর্ট সাইরু-তে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে অভিযান করেছে। এতে প্রাথমিকভাবে ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির অনিয়ম পাওয়া গেছে। এই পাহাড়ি রিজোর্টটি বান্দরবন শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক রোডে অবস্থিত। মূসক নিবন্ধন নম্বর ০০১৫৭৭০৯৪-০৫০১। আজ ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের একটি বিশেষ দল সাইরু রিজোর্টে অভিযানটা পরিচালনা করে। সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন বান্দরবনের সাইরু রিজোর্ট প্রাঙ্গনে অভিযানটিতে নেতৃত্ব দেন। পাশাপাশি ভ্যাট গোয়েন্দার আরেকটি দল সাইরুর রাজধানীর বনানীস্থ হেডঅফিসেও অভিযান করে। কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর সফুরা টাওয়ারের ১৪ তলায় এর হেড অফিস। এতে উপপরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়। প্রাথমিকভাবে দুটো অভিযানে ভ্যাট গোয়েন্দার দল ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে।

গোয়েন্দারা ২০১৮ থেকে রিজোর্টের প্রকৃত বিক্রয় তথ্য উদ্ধার এবং কম্পিউটার থেকে তথ্যাদি জব্দ করেছে। এতে দেখা যায়, স্থানীয় বান্দরবন ভ্যাট সার্কেলে রিজোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রকৃত বিক্রয় গোপন করেছে। যেমন সদ্যসমাপ্ত অক্টোবর ২০২০ কর মেয়াদের রিটার্নে (যা নভেম্বর ১৫ তারিখে দাখিলকৃত) তাদের হোটেলে সেবা বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ১১.৩৯ লক্ষ টাকা, যার উপর ১৫% হিসেবে আদর্শ হারে পরিশোধিত মূসক .৭০ লক্ষ টাকা এবং আদর্শ হার ব্যতীত বিক্রয় লক্ষ টাকা যার উপর .% হারে পরিশোধিত মূসক ৩০ হাজার টাকা। উদ্ধার করা বিক্রয় তথ্য অনুসারে, ভ্যাট গোয়েন্দার দল দেখতে পান যে, মাসে বিক্রয় হয় .২৯ কোটি টাকা, যার উপর ১৫% হারে প্রদেয় মূসক ১৯.৪৭ লক্ষ টাকা অর্থাৎ মূসকসহ মোট বিক্রয় .৪৮ কোটি টাকা। এই হিসাব অনুসারে, কেবল অক্টোবর ২০২০ মাসে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে প্রায় ১৭.৪৭ লক্ষ টাকা। ভ্যাট গোয়েন্দারা অন্যান্য মাসেও অনুরূপ ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে।

উদ্ধারকৃত তথ্যমতে, সাইরু রিজোর্ট গড়ে প্রতিমাসে ভ্যাট দিয়েছে প্রায় লক্ষ টাকা। কিন্তু প্রকৃত বিক্রয় অনুসারে ভ্যাট প্রযোজ্য হয় মাসে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। ভ্যাট গোয়েন্দার দলের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, সাইরু কর্তৃপক্ষ ক্রেতাদের নিকট হতে ভ্যাট আদায় করলেও তা যথাযথভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি; ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। জব্দকৃত কাগজপত্র যাচাই আরো তদন্ত শেষে সাইরু রিজোর্টের বিরুদ্ধ ভ্যাট আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।