অর্থ ও বাণিজ্য ২৯ নভেম্বর, ২০২০ ০৫:৫৫

স্বর্ণ-রুপার দাম কমলেও ঊর্ধ্বগতিতে তেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে চলতি বছরের শুরু থেকে বিশ্ববাজারে সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও বর্তমানে বড় পতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে স্বর্ণ ও রুপা। গত সপ্তাহে স্বর্ণের দাম কমেছে প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ এবং রুপার প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ। যা গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে স্বর্ণ-রুপার সবচেয়ে বড় পতন।

এদিকে ঊর্ধ্বগতিতে তেলের বাজার। অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ এবং ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ।

বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে গত ৬ আগস্ট দেশের বাজারেও বাড়ানো হয়েছিলো স্বর্ণের দাম। ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম রেকর্ড ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭৪ হাজার ৬৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৫ হাজার ৩১৮ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণ ৫৪ হাজার ৯৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তবে ৭ আগস্ট থেকে পতনের মুখে স্বর্ণের দাম। ১১ আগস্টে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১১২ ডলার পর্যন্ত কমে যায়। এরপরই চলতে থাকে স্বর্ণের পতনের ধারা। বিশ্ববাজারের সাথে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। সে সময় ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৪৪৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ৭৪ হাজার আট টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ভরি ৭০ হাজার ৮৫৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ভরি ৬২ হাজার ১১১ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫১ হাজার ৭৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এরপর মাঝে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আরও একটু বাড়ে। তবে দুই সপ্তাহ ধরে পতনের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণের দাম। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়। এতে ২৫ নভেম্বর থেকে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়।

এ দফায় ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৫০৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ৭৩ হাজার ৮৩৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭০ হাজার ৬৮৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬১ হাজার ৯৩৬ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণ ৫১ হাজার ৬১৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২৩ দশমিক ৯৭ ডলার কমে ১৭৮৬ দশমিক ৬০ ডলারে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে চার মাস বা গত জুলাইয়ের পর প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৮০০ ডলারের নিচে নেমে গেল। আর সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমলো ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে রুপার দামেও বড় উত্থান হয়। গত সপ্তাহে রুপার দাম বেড়ে ২০১৩ সালের মার্চে পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। প্রতি আউন্স রুপার দাম ২৮ দশমিক ২৬ ডলার স্পর্শ করে।

স্বর্ণের মতো রেকর্ড দামে পৌঁছে রুপার দামেও পতন শুরু হয়। গত এক সপ্তাহ বিশ্ববাজারে রূপার দাম ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স রুপার দাম ২২ দশমিক ৫৮ ডলারে নেমে এসেছে। এতে গত সেপ্টেম্বরের পর এক সপ্তাহে রূপার দামে সর্বোচ্চ পতন হলো।

স্বর্ণ ও রুপার এই দরপতনের মধ্যে বাড়ছে তেলের দাম। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দরপতনের কারণে গত ২০ এপ্রিল প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ঋণাত্মক ৩৭ ডলারের নিচে নেমে যায়।

রেকর্ড এই দরপতনের পরই অবশ্যই তেলের দাম বাড়তে থাকে। গত সপ্তাহের শেষে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বেড়ে ৪৫ দশমিক ৫৩ ডলারে উঠেছে। এর মধ্যে গত মার্চের পর অপরিশোধিত তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে এসেছে।

অপরিশোধিত তেলের পাশাপাশি বড় দাম বেড়েছে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের। গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়ে ৪৮ দশমিক ১৮ ডলার উঠে এসেছে।