শিক্ষা ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ১১:৪০

‘দাওয়াতুল কুরআন’

মাদ্রাসা ছাড়ছেন হিজড়ারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য প্রথম প্রতিষ্ঠিত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গ মাদ্রাসা’। কিন্তু কামরাঙ্গীরচরের  সেই মাদ্রাসায় কমতে শুরু করেছে  শিক্ষার্থীদের সংখ্যা।

গত নভেম্বর ১৫০ জন হিজড়া শিক্ষার্থী নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শুরু হয়েছিলদাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসাটি। গণমাধ্যমে অধিক প্রচারের ফলে নানান বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন হিজড়ারা। টাকা কালেকশনে নামলে তাদের স্থানীয়দের কটুক্তির শিকার হতে হচ্ছে। ফলে ১৫০ জন হিজড়া নিয়ে শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি এখন মাত্র ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে

a

আমাদের কাগজের সাথে একান্ত আলাপকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতি মুহাম্মাদ আবদুর রহমান আজাদ। এছাড়া সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাদ্রাসাটির সদর দরজা বন্ধ। বেশ কয়েকবার কড়া নাড়ার পর হাফেজ মাওলানা মাহামুদুল হাসান নামের এক ব্যক্তি দরজা খুলে দিলেন। পরিচয় দেওয়ার পরপর জানালেন মিডিয়া কাভারেজ নিষিদ্ধ। কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বরত মাহামুদুল হাসান আমাদের কাগজকে বলেন, মাদ্রাসা পরিচালকের নিষেধ আছে। হিজড়াদের নিয়ে প্রচার করলে তারা নানা রকম বাধার সম্মুখীন ফলশ্রুতিতে তারা মাদ্রাসার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তবে যে ২০-২৫ জন প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়মিত ধর্মীয় শিক্ষা নিতে আসে তাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তার এখানে যতক্ষণ থাকে খুব ভদ্র শালীনতার সাথে কোরআন শিক্ষা গ্রহণ করে। রাস্তাঘাটেও আগের মত হৈ-হুল্লোড় করে না।

দাওয়াতুল কুরআন মাদ্রাসাটিতে হিজড়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বলেন, প্রথমে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলাম হিজড়াদের কাছ থেকে। তবে বর্তমানে মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচারনার ফলে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে গেছে।

প্রচারের ফলে কেনো হিজড়াদের সংখ্যা কমে গেছে এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি আজাদ বলেন, প্রচারের কারণে স্থানীয়রা তাদের কালেকশনের সময় বাজে মন্তব্য করে। তারা বলে তোমারা মাদ্রাসায় পড়ো আবার চাঁদা না কেনো। এমন পরিস্থিতে তাদের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে ড়েছে।

তিনি বলেন, হিজড়ারা এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে আমরা তাদের মিডিয়ায় দেখিয়ে ব্যবসা করছি কিনা। কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছি। মরহুম আহমেদ ফেরদৌস বারী চৌধুরী ফাউন্ডেশন আমাদের অর্থায়ন করেছে। আমরা সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক সহায়তা নেইনি। আমরা কোনো লাভের আশায় না বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছি