সোশ্যাল মিডিয়া ১ নভেম্বর, ২০২০ ০১:৫২

লালমনিরহাটে পুড়িয়ে হত্যা

মানুষ পুড়িয়ে অগ্নি উৎসব!

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটে গুজবে প্রাণ গেছে শহিদুজ্জামান জুয়েল নামের এক ব্যক্তির। তাঁকে হত্যার পর লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই প্রতিবাদ জানান। এমন অমানবিক কাজে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানানো হয়েছে।

কোরআন অবমাননা যে গুজব শহিদুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে উঠেছিল এরকো সত্যতা এখনও পাওয়া যায়নি।

এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের মানসিক অবস্থা তুলে ধরেছেন লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা তার স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-    

‘গত পরশুদিন বিভীষিকাময় একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে পাটগ্রাম থানা থেকে লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি রাত আড়াইটার দিকে।

গাড়ির জানালার কাচেঁ চোখ পরতেই দেখি লালচে হলুদ রঙের বিশাল গোলাকার চাদঁ। চারদিকে ঝলমলে জোছনার আলো। প্রায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দুপাশের ধান ক্ষেত, গাছপালা, বাড়িঘর সবই। কিন্তু এই দৃশ্য মনকে এতটুকু ভাললাগায় আপ্লুত করেনি। যেন নজরে পরছে না যেন কিছুই! পরেরদিন বুড়িমারি যাবার পথে একবারের জন্যও দৃষ্টি গাড়ির জানালার কাচঁ ভেদ করেনি।

ডিআইজি স্যার যখন বললেন, “পাটগ্রাম থেকে কি পাহাড় দেখা যায় নাকি?” পাশে তাকিয়ে চোখে পরে অবাক করা সেই দৃশ্য! ধানের মাঠ পেরিয়ে দূরে দৃষ্টির সামনে সারি সারি পাহাড়। পর্বতের চূড়ায় ধবধবে সাদা বরফের উপর একেঁ দেয়া রোদ্র কীরনের অপরূপ খেলা। কিন্তু মনকে নাড়া দিল না এতটুকু! অন্য সময় দিন কিংবা রাত সবসময় গাড়িতে বসে দুপাশের দৃশ্য উপভোগ করি প্রাণভরে। কিন্তু এখন এই অপার্থিব সৌন্দর্য্য আমাকে স্পর্শ করল না এতটুকু। সেই মানুষিক অবস্থা নেই। এটা কি হলো ! কীভাবে সম্ভব?

একজন মানুষকে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে এমন নির্মমভাবে হত্যা করা সম্ভব! শুধু হত্যা করেও শান্তি আসেনি মনে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে অগ্নি উৎসব! শত শত মানুষ হাতের মোবাইল ফোন দিয়ে সেই দৃশ্য ভিডিও করতে ব্যাস্ত! আহারে মানুষ!