অপরাধ ও দুর্নীতি ২২ অক্টোবর, ২০২০ ০৬:৩৮

আগে কারাফটকে বিয়ে, তারপর জামিন: উচ্চ আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও ভুক্তভোগী মেয়েটির মধ্যে কারা ফটকে বিয়ের আয়োজন করতে রাজশাহী কারাগারের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। আর বিয়ের পর ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এর পরেই আসবে জামিনের বিষয়টি।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার ওই আদেশ দেন। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পর জামিন চেয়ে দিলীপ নামের ওই আসামির জামিন আবেদনের শুনানিতে ওই আদেশ দেওয়া হয়। আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, জামিন পেলে ভুক্তভোগী নারীকে বিয়ে করবেন উল্লেখ করে দিলীপ জামিন আবেদন করেন। হাইকোর্ট কারাফটকে ভুক্তভোগী ও দিলীপের বিয়ের আয়োজন করতে রাজশাহী কারাগারের তত্ত্বাবধায়ককে বলেছেন। আর বিয়ের ত্রিশ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এই শর্তে জামিন দেওয়া হবে বলেছেন আদালত।

জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার দিলীপ খালকোর সঙ্গে তাঁর খালাতো বোনের (ভুক্তভোগী) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। খালাতো বোনকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দৈহিক সম্পর্কে জড়ান দিলীপ। এতে ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের প্রতিশ্রুতির কথা অস্বীকার করেন দিলীপ। এ নিয়ে মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে তখন মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর এগোয়নি। এ অবস্থায় ২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর দিলীপের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী। এ মামলায় ২০১২ সালের ১২ জুন বিচারিক আদালত রায় দেন। এই রায়ে দিলীপকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যখন ভুক্তভোগী মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হন, তখন তার বয়স ১৪ বছর ছিল বলে ওই রায়ে বলা হয়। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন দিলীপ। আদালত আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। এরপর জামিন চেয়ে সম্প্রতি আবেদন করে দিলীপ, যা বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য ওঠে। ২০১২ সালের রায়ের পর থেকে দিলীপ কারাগারে আছেন।